একতার কণ্ঠঃ : টাঙ্গাইলে আসন্ন রমজানে নিত্যপন্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এই উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার (১৪ মার্চ)দুপুরে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আইরিন আক্তারের নেতৃত্বে শহরের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার পার্কবাজার পরিদর্শন করা হয়।
এ সময় বাজারের সকল ব্যবসায়ীদের মাঝে লিফলেট বিতরণসহ প্রতিটি দোকানে মুল্য তালিকা টানানো এবং অতিরিক্ত দামে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বাজার মনিটরিং করার সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আইরিন আক্তার গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সচেতনতা করাসহ সকলের মাঝে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা যাতে মজুদ করে অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি না করে সেজন্য তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান,কেউ বিধিনিষেধ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল পৌর মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল করিম, জেলা সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা তাহলিমা জান্নাত, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, টাঙ্গাইল ব্যবসায়ী ঐক্যজোটের সভাপতি আবুল কালাম মোস্তফা লাবু, পার্ক বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জোয়াহের আলী প্রমুখ।
একতার কণ্ঠঃ হিন্দু ধর্মের প্রশ্ন সম্বলিত ইসলাম ধর্ম পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পেলেন এসএসসির মডেল টেস্ট পরীক্ষার্থীরা। সোমবার (১৩ মার্চ) ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাতুলী ইউনিয়নের বাগবাড়ি চৌবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রে এর প্রতিবাদ করায় পরীক্ষা স্থগিত ও পূনরায় ওই পরীক্ষা নেয়ার তারিখ নির্ধারণ করা হলেও এর কঠোর বিচার দাবি করেছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত বলে দাবি করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, ১৯৩৫ সালে স্থাপিত হয় টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাতুলী ইউনিয়নের বাগবাড়ি চৌবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত এ উচ্চ বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৪০০ জন। এর মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার্থী ২০০জন। ৫০০ টাকা বেতনে বিদ্যালয়ের এসএসসি কোচিং শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫০ জন।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থীরা জানায়, সোমবার (১৩ মার্চ) ছিল আমাদের ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা পরীক্ষা। কেন্দ্রে প্রশ্ন পাওয়ার পর আমরা দেখি ইসলাম ধর্ম পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে হিন্দু ধর্মের প্রশ্ন। বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করায় পরীক্ষা নেয়া বন্ধ করেছেন কর্তৃপক্ষ। এরপর জানায় পরীক্ষাটি পরে নেয়া হবে। তবে প্রশ্নপত্র আমাদের হাতে দেয়ার আগে কর্তৃপক্ষ কেন সেটি আগে যাচাই করলেন না এমন প্রশ্ন তুলেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
কাতুলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রিপন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আমি হিন্দু ধর্মের প্রশ্ন দিয়ে ইসলাম ধর্ম পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেয়া হয়েছে বিষয়টি জানতে পারি। আমি এলাকায় ছিলাম না, পরবর্তীতে কি হয়েছে এর বাইরে আমি আর কিছুই জানি না। তবে ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হননি তিনি।
কাদের, ইউসুফসহ বেশ কয়েকজন অভিভাবকের অভিযোগ, সামনেই এসএসসি পরীক্ষা দেবে আমাদের শিক্ষার্থীরা। তাদের ফলাফল ভালো হওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিদ্যালয়ে কোচিং করানো হচ্ছে। প্রতিমাসে কোচিং ফি বাবদ টাকাও নিচ্ছেন বিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের মান যাচাই করতে বিদ্যালয় থেকে মডেল টেস্ট পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার (১৩ মার্চ) ছিল ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা পরীক্ষা। ওই পরীক্ষা দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা দেখে ইসলাম ধর্ম পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে হিন্দু ধর্মের প্রশ্ন। প্রশ্ন পরে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করার পর প্রশ্নপত্রটি দেখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ দায়িত্বরত শিক্ষকরা।
এ অভিযোগ পেয়ে আমরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে সাথে দেখা করলে তিনি জানান প্রশ্নগুলো ঢাকা থেকে কিনে এনে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। এ কারণে সমস্যাটি হয়েছে।
তারা বলেন, মডেল টেস্টের প্রশ্ন কেন কর্তৃপক্ষ নিজেরা না করে কিনে এনে পরীক্ষা নিচ্ছেন। তাহলে কেন বিদ্যালয়ের বেতন, পরীক্ষার ফিসহ কোচিং এর জন্য টাকা দিচ্ছি আমরা ? আমাদের শিক্ষার্থীদের কি শিক্ষা দিচ্ছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমন প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
তারা আরও বলেন, ইসলাম ধর্ম পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে হিন্দু ধর্মের প্রশ্ন এটি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা। চরম দায়িত্ব অবহেলায় লিপ্ত এই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীদের মডেল টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে এমন ভুলের বিষয়টি কি দেখেননি আমাদের জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগ কর্তৃপক্ষরা এমন প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
ইসলাম ধর্ম পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে হিন্দু ধর্মের প্রশ্ন থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বাগবাড়ি চৌবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ছানোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, ঢাকার প্রশ্নঘর থেকে ২৫ টাকা দরে প্রতিসেট প্রশ্নপত্র কেনা হয়েছে। অন্যান্য পরীক্ষার প্রশ্ন ঠিক থাকলেও ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার প্রশ্নপত্রে এমন ভুল হয়েছে। আগামী ২২ মার্চ পুনরায় নতুন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষাটি নেয়া হবে। বিষয়টি প্রশ্নঘর মালিক পক্ষকে জানানো হয়েছে।
বাগবাড়ি চৌবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি নায়েব আলী সরকার বলেন, এটি একটি অনাকাঙ্খিত ভুল। পরবর্তিতে সতর্ক থাকার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানিক কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রোকেয়া খাতুন জানান, বিষয়টি আমি জানিনা। আগামীকাল সকালে প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে এর বিরুদ্ধে পরবর্তি ব্যবস্থা নিব।
একতার কণ্ঠঃ নতুন কারিকুলামে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে কোনো প্রচলিত পরীক্ষা বা মডেল টেস্ট নেওয়া যাবে না বলে নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর মাউশি।
সোমবার (১৩ মার্চ ) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এক আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
মাউশির আদেশে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিখন-শেখানো ও মূল্যায়ন কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এনসিটিবি প্রণীত শিক্ষক সহায়িকা এবং শিক্ষাক্রমের নির্দেশনা অনুসারে সম্পাদন করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে প্রচলিত কোনো পরীক্ষা/মডেল টেস্ট গ্রহণ করা যাবে না। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বিষয়ে এনসিটিবি থেকে যে গাইডলাইন পাওয়া যাবে, তা পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে।
সংবাদ সূত্র – The Daily Star বাংলা