একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুরে বাকিতে ইয়াবা না দেওয়ায় এক মাদক ব্যবসায়ীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে সেবনকারীরা। ঘটনার তিন দিন পর তিন সেবনকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার (১ মার্চ)দুপুরের টাঙ্গাইলের পিবিআই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমীন সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- নাগরপুর উপজেলার ভাড়রা গ্রামের মো. আনোয়ার তালুকদারের ছেলে মো. অলি তালুকদার (১৯), মৃত সিরাজ মন্ডলের ছেলে মো. কামাল হোসেন (২৯) ও শালিয়ারা গ্রামের মো. শফিকুল আলমের ছেলে মো. সোহানুর ইসলাম ফারদিন (২০)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমীন জানান, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকালে নাগরপুর উপজেলার বীরসলীল গ্রামের সেচ পাম্পের ঘর থেকে ফরিদ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন বিকালে ফরিদ উদ্দিনের স্ত্রী শারমিন সুলতানা লিলি বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে নাগরপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটি পিবিআই গ্রহণ করে।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর কৃষি জমিতে পানি দেওয়ার জন্য ফরিদ উদ্দিন তার সেচ পাম্পের ঘরে যান। পর দিনও তিনি আর বাড়ি ফিরে আসেননি। ২৫ ফেব্রুয়ারি তার চাচাতো ভাই মধু মিয়া ও প্রতিবেশী পান্নু মিয়া সেচ পাম্পের ঘরের কাছে কাজ করার সময় ঘরটি তালাবদ্ধ দেখেন। এ দিকে ফরিদ উদ্দিনের পোষা কুকুর উচ্চশ্বরে ঘেউ ঘেউ করতে থাকে। তখন মধু ও পান্নু ঘরের ফাঁক দিয়ে দেখতে পান ফরিদ বিছানার উপর পড়ে আছে। তারা বিষয়টি তার পরিবার ও পুলিশকে অবগত করে। মামলার পর তদন্ত করে মঙ্গলবার রাতে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। বুধবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
মোহাম্মদ সিরাজ আমীন জানান, ফরিদ উদ্দিন দীর্ঘদিন যাবত ইয়াবার ব্যবসার সাথে যুক্ত ছিলেন। তার কাছ থেকে আসামিরা ইয়াবা কিনে সেবন করতো। ঘটনার দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে আসামিরা ফরিদের কাছে ইয়াবা বাকি চাইলে দিতে অস্বীকার করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে ঘরে থাকা স্লাইডরেঞ্জ দিয়ে ফরিদের মাথার পেছনে আঘাত করলে সে পড়ে যায়। পরবর্তীতে রশি দিয়ে তার হাত পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে তারা তিনজনই জড়িত ছিল বলে তিনি আরো জানান।
একতার কণ্ঠঃ বাৎসরিক ওরশ মাহফিলে যাওয়ার পথে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পিকআপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে খাদে পড়ে তিন নারী যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৮-২০ জন।
বুধবার (১ মার্চ) দুপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব মহাসড়কের উপজেলার আনালিয়াবাড়ী নামক এলাকায় ১০ নং ব্রীজের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত তিন নারী যাত্রী হলেন- জামালপুর সদর উপজেলার গান্দাইল এলাকার গাদুগানের মেয়ে শাহারা ওরফে শাহানা বেগম (৬০), পেচামানিক এলাকার মাহতাব আলীর মেয়ে নুর জাহান (৫০) এবং অপরজন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার গৌরাং এলাকার জাবেদ আলীর মেয়ে ফিরোজা বেগম (৬০)।
এদিকে, আহতরা সবাই জামালপুর সদর উপজেলার গান্দাইল ও পেচামানিক এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই গুরুতর আহত অবস্থায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। তারা ওরশ মাহফিলের যাত্রী ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, জামালপুর সদর উপজেলা থেকে ছেড়ে আসা একটি খোলা পিকআপযোগে ৩০/৩৫ জন যাত্রী নিয়ে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর ওরশ মাহফিলে যাচ্ছিল। তারা দুপুরে মহাসড়কের আনালিয়াবাড়ী পৌঁছলে ঢাকাগামী একটি বাস ওভারটেকিং করতে গিয়ে পিকআপটিকে চাপ দেয়।
এসময় পিকআপটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে উল্টে খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে পিকআপের দুই নারী যাত্রী মারা যায়। আহত হয় কমপক্ষে ১৮-২০ জন যাত্রী। পরে খবর পেয়ে এলেঙ্গা ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ সদস্যরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে। পরে তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে গুরুতর আহত আরও এক নারী মারা যায়।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম এ তথ্যটি নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয় এবং ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদেরকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রেরণ করা হয়। আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।
তিনি আরো জানান, নিহতদের লাশ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।