একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত শামছুল হক সেতুর আশপাশ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন দেলদুয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র দুই সহযোগী নিরাপত্তা কর্মী রাজু আহম্মেদ ও এলাসিন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) শাহাদত হোসেন।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার উদ্যোগ নিলে এ হামলা চালান অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা।
দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করে দিচ্ছে একটি প্রভাবশালী একটি চক্র। এ ব্যাপারে একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে প্রশাসন। কিন্তু ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই মাটি উত্তোলনকারীরা টের পেয়ে তাদের সরঞ্জাম নিয়ে চলে যায়। ফলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার দুপুরে মাটি কাটা বন্ধ করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) সূচি রানী সাহা তার টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে রওনা দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই শামছুল হক সেতুর টোল প্লাজার উত্তর পাশের সড়কে মাটি উত্তোলনকারীরা লাঠিসোটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) সূচি রানি সাহা অক্ষত থাকলেও তার দুই সহযোগী নিরাপত্তা কর্মী রাজু আহম্মেদ ও এলাসিন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) শাহাদত হোসেন গুরুতর আহত হন। হামলাকারীরা কাঠের চলা ও লাঠি দিয়ে তাদের বেধড়ক পেটায়। এক পর্যায়ে তারা অজ্ঞান হয়ে পড়লে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা আলী বলেন, ঘটনা জানার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাটি বহনের কাজে নিয়োজিত ২টি ট্রাক আটক করা হয়েছে। এ সময় ট্রাকের চালকরা পালিয়ে যাওয়ায় থানা পুলিশের সহায়তায় রেকারের মাধ্যমে ট্রাক ২টিকে প্রশাসনের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একতার কণ্ঠঃ দীর্ঘ ২৪ বছর পর সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং তার ছোট ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী একই মঞ্চে একত্রিত হয়েছেন। একটি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের এক মঞ্চে হাজির হওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন নেতাকর্মীরা।
এর আগে ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে কালিহাতীর আউলিয়াবাদে একটি অনুষ্ঠানে দুই ভাই একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। এরপর নানা কারণে দুই ভাইকে আর এক মঞ্চে দেখা যায়নি।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র জমাদানের ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে লতিফ সিদ্দিকী ও কাদের সিদ্দিকী একই মঞ্চে উঠে বক্তব্য দেন।
কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র জমাদানের ৫০ বছর উদযাপন কমিটির সভাপতি এ এম এনায়েত করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক। এ সময় কাদেরিয়া বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক মোহন, কবি বুলবুল খান মাহবুব, কবি আল মুজাহিদী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান খোকা বীর প্রতীক, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সহধর্মিণী নাসরিন কাদের সিদ্দিকী প্রমুখ।
এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হওয়ায় মিলনমেলায় পরিণত হয় টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। জাতির বীর সন্তানরা একে অপরকে কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, দীর্ঘ বছর পর একই মঞ্চে দুই ভাই উপস্থিত হয়েছি। অনুষ্ঠানে সরকার থেকে আওয়ামী লীগের মৃনাল কান্তি রায়কে পাঠানো হয়েছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে তার বাসভবনে গিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ভাই হিসেবে ডেকে ছিলেন। তার সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছি পরিবার নিয়ে। বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়েছে আমাদের।
একতার কণ্ঠঃ অন্যান্য দিনের মতো রোববার (২২ জানুয়ারি) টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের লাউহাটি বাজারে নিজের স্টেশনারি দোকানে কাজ করছিলেন হাসমত আলী খান। তখন খবর পান, একটি মহিষ এসেছে তাঁদের এলাকায়। যাঁকে সামনে পাচ্ছে, তাঁকেই আক্রমণ করছে। দোকান ফেলে তিনি মানুষকে রক্ষা করতে ছুটে যান। সেখানে মহিষের আক্রমণের শিকার হন। পরে সোমবার (২৩ জানুয়ারি) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
হাসমত আলী খান উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি তারুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক জানান, হাসমত তাঁকে ফোন করে মহিষের আক্রমণের কথা জানান। এ ব্যাপারে পুলিশ ও প্রাণিসম্পদ বিভাগে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। এর মধ্যে মানুষের যাতে ক্ষতি না হয়, সে জন্য তিনি মহিষটির আশপাশেই অবস্থান করছিলেন। মানুষকে সতর্ক করছিলেন। এর মধ্যে হঠাৎ তাঁকেই আক্রমণ করে বসে মহিষটি।
হাসমত আলীর মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তাঁর স্বজন ও এলাকার মানুষ। এই মহিষের আক্রমণে হাসমত আলী ছাড়াও হাজেরা বেগম ও কিতাব আলী নামের দুজন মারা গেছেন। তাঁদের মৃত্যুতে এলাকার সবাই শোকাহত।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, রোববার পার্শ্ববর্তী বারোপাখিয়া গ্রামের শরীফ মিয়ার মহিষ হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। যাঁকে সামনে পায়, তাকেই গুঁতা দিতে থাকে। মহিষের আক্রমণে শরীফ মিয়া আহত হন। একপর্যায়ে মহিষটিকে স্থানীয় লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া করেন। পরে মহিষটি লাউহাটি এলাকায় চলে আসে। সেখানেও মানুষের ওপর আক্রমণ শুরু করে।
লাউহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন মোহাম্মদ খান জানান, মহিষের আক্রমণে ১০–১২ জন আহত হন। এর মধ্যে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারুটিয়া গ্রামের আজগর আলীর স্ত্রী হাজেরা বেগম (৪২) রোববার বিকেলে মারা যান। সোমবার রাতে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হাসমত আলী (৫৭)। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বারোপাখিয়া গ্রামের কিতাব আলীর অবস্থার অবনতি হয় সোমবার রাতে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটিতে পাগলা মহিষের আক্রমণে নারীসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে তিনজন হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ২২ জন। আহতদের টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিহতরা হলেন, লাউহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসমত আলী খান, লাউহাটি ইউনিয়নের তারুটিয়া গ্রামের আজগর আলীর স্ত্রী হাজেরা বেগম, এলাসিন ইউনিয়নের বারপাখিয়া গ্রামের কিতাব আলী।
দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, রবিবার সকালে একটি পাগলা মহিষ লাউহাটি ইউনিয়নের তারুটিয়া গ্রামে জনসাধারণের ওপর আক্রমণ করে। এ সময় মহিষটির আক্রমণের শিকার হয়ে অন্তত ২৫ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে মির্জাপুর কমুদিনী ও টাঙ্গাইল জেনালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকেলে ৩টার দিকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হাজেরা বেগম। খবর পেয়ে জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা সেখানে যান। তার আগেই স্থানীয়রা মহিষটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।
এদিকে হাসমত আলীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রবিবার রাতেই সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ার কারণে তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সোমবার রাত ৯টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। অপর আহত কিতাব আলী টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে সোমবার বিকেলে মৃত্যুবরণ করেন।
টাঙ্গাইল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রানা মিয়া জানান, অতি উৎসাহী লোকজন পিছু নেওয়ায় মহিষটি আরও উত্তেজিত হয়ে উঠে। লোকজন মহিষটিকে ধাওয়া না করলে হয়তো হতাহতের সংখ্যা আরো কম হত । খবর পেয়ে ঢাকা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে জানিয়েছিলাম।
তিনি আরো জানান,রবিবার বিকেলে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে প্রাণি ফ্রাংকুলাইজেশ (অচেতন) দল ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই স্থানীয় লোকজন মহিষটিকে মেরে ফেলে।