মুখ থুবড়ে পড়েছে টাঙ্গাইল লৌহজং নদী উদ্ধার কার্যক্রম


১২:৪৩ পিএম, ২৩ মে ২০২২
মুখ থুবড়ে পড়েছে টাঙ্গাইল লৌহজং নদী উদ্ধার কার্যক্রম - Ekotar Kantho

একতার কণ্ঠঃ  মুখ থুবড়ে পড়েছে টাঙ্গাইল শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া লৌহজং নদীটির উদ্ধার ও দূষণমুক্ত কার্যক্রম। তৎকালীন জেলা প্রশাসক ২০১৬ সালে নদীর দুই পাশে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে আংশিক দখল মুক্ত করলেও পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় উদ্ধার অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিনেও কর্তৃপক্ষ আর এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। ফলে হতাশায় টাঙ্গাইলবাসী। দ্রুত নদীটি দখল ও দূষণের কবল থেকে মুক্ত করার দাবি তাদের। এদিকে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক দখল-দূষণের কথা স্বীকার করে আবারও কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন।

টাঙ্গাইল শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া লৌহজং নদীটি একসময়ে খরস্রোতা থাকলেও বর্তমানে অবৈধ দখলদারদের কবলে পরে নদীটি মৃত খালে পরিণত হয়েছে। একসময় টাঙ্গাইল শহরের পাশেই ছিল নৌবন্দর। দেশ-বিদেশে থেকে লঞ্চ, স্টিমার, জাহাজ ও বড় বড় নৌকা বাণিজ্যে আসত এ নৌবন্দরে। মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ ছিল এখানে। আর এখন এসব কিছুই যেন শুধুই রূপকথার গল্প। বিশ্বাস করতেও কষ্ট হয় একসময় এ নদী দিয়েই চলত এসব ভারী ভারী নৌযানগুলো।

দীর্ঘদিন ধরে নদীটি ড্রেজিং না করায় আর নদীর দু’পাশে অবৈধভাবে বাড়ি তৈরি করায় বর্তমানে এটি একটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন মিল কারখানা, বাড়ি আর শহরের সব ময়লা আবর্জনা নদীতে গিয়ে দূষিত হচ্ছে পানি। বর্তমানে নদীর পানি আর ব্যবহার উপযোগী নেই। নদীর স্বাভাবিক গতি হারিয়ে সরু খালে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া অনেক জায়গায় পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে আছে।

20230826-141431

২০১৬ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক নদীটি পুনঃখনন ও দূষণমুক্ত করতে কাজ শুরু করে। আংশিক অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করলেও পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। অতিদ্রুত নদীটি পুনঃখনন এবং অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ না করা হলে মানচিত্র থেকে এই নদী হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় জনসাধারণ।

এদিকে টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদফতরের উপপরিচালক জমির উদ্দিন জানান, কারখানার বর্জ্যে নদী দূষণরোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি দখল দূষণের কথা স্বীকার করে জানান, নদীরক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। এ নদী রক্ষা করা না হলে টাঙ্গাইলবাসী ভয়াবহ সমস্যায় পড়বে। নদী উদ্ধার কার্যক্রমসহ বেশকিছু প্রকল্প দেওয়া আছে। অনুমোদনসাপেক্ষে বাজেট বরাদ্দ হলে আবারও কাজ শুরু করা হবে।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার জুগনী থেকে বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত ৭৫ কিলোমিটার লৌহজং নদী প্রথম পর্যায়ে পৌর এলাকার ৩ কিলোমিটার এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার কাজ শুরু করা হলেও পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় কাজটি দীর্ঘদিন ধরে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।


পাঠকের মতামত

-মন্তব্য সমূহ পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নিউজটি শেয়ার করুন

কপিরাইট © ২০২২ একতার কণ্ঠ এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।