একতার কণ্ঠঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার হাটকয়েড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসাইনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অর্থ আত্মাসাতের অভিযোগ উঠেছে।
আর প্রধান শিক্ষকের এসব কর্মকান্ডের ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে অভিভাকরা ক্রমাগত তাদের সন্তানদের পার্শ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করায় বিদ্যালয়টি প্রায় শিক্ষার্থী শূন্য হয়ে পরার উপক্রম হয়েছে।
স্থানীয় গ্রামবাসী ও অভিভাবকদের মতে প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতায় বিদ্যালয়টি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাড়িয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক আসবাবপত্র ক্রয় ও মেরামতের নামে প্রতিষ্ঠানের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও অভিভাবকরা জানান, গত ২০১১ সালের ২৭ মার্চ ঘাটাইল উপজেলার হাটকয়েড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন মো. সোহরাব হোসাইন। পার্শ্ববর্তী গ্রামে তার বসবাস হওয়ার কারণে স্থানীয় প্রভাবে যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন আসবাবপত্র ক্রয়ে রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম। এছাড়া প্রতি বছর স্লীপ ফান্ডের অর্থ কোথায় কিভাবে ব্যয় করেন এ ব্যাপারে কমিটির অন্যরা কিছুই জানেন না।
ওই গ্রামের বাসিন্দা ও ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী জানান, প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসাইন যোগদানের সময় ওই বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ক্লাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় আড়াইশ। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে প্রকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা শতকের নীচে।
সরেজমিনে ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মাহমুদুল হাসান মুকুল, কামরুল হাসান, অভিভাবক আবুল কালাম, গিয়াস উদ্দিন, নিতাই সুত্রধর সহ অনেকেই জানান, বিদ্যালয়ে পড়াশুনার কোন পরিবেশ নেই। প্রধান শিক্ষক নিজে চারজন সহকারী শিক্ষিকা নিয়ে অফিস রুমে প্রায়ই টাঙ্গাইলের কৌতুক অভিনেতা আহসানের ভাদাইমা নাটক দেখে সময় কাটান। এছাড়াও তিনি দাম্ভিকতার সাথে বলেন সরকারি চাকুরি করেন। এ স্কুলে শিক্ষার্থী না থাকলেও তার চাকুরি যাবেনা।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শামীম আল মামুন জানান, তিনি সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রধান শিক্ষক কোন মাসিক প্রতিবেদনে স্বাক্ষর নেয়নি। এছাড়া বিদ্যালয়ের ভাউচারের বিপরীতে তার স্বাক্ষর জাল করে প্রধান শিক্ষক টাকা উত্তোলন করেছেন। বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও শিক্ষার মানোন্নয়ন হয়নি। বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ লাইন থাকলেও দীর্ঘদিন যাবত তা বিচ্ছিন্ন। বিদ্যালয়ের একমাত্র নলকূপটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
ঘাটাইল উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাজমুল হোসাইন জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। তবে তিনি অন্যত্র বদলীর জন্য অফ লাইনে চেষ্টা করছেন।
টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুব্রত কুমার বণিক জানান, তিনি এ বিষয়ে অবগত নন। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।