একতার কণ্ঠঃ রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মেহেদী হাসান নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায়।
সে উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের আয়নাল মিয়ার ছেলে।
মেহেদী বেইলি রোডের বহুতল ভবনের ২য় তলায় একটি ফাস্টফুডের দোকানে চাকরি করতেন। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) এই ভবনে আগুনে নিহত ৪৬ জনের মধ্যে তিনিও একজন।
নিহতের ছোট ভাই ইসরাফিল একই জায়গায় কাজ করলেও অগ্নিকাণ্ডের সময় তিনি একটি কাজে ভবনের অন্য একটি তলায় গিয়েছিলেন। যে কারণে তিনি প্রাণে বেঁচে আছেন।
শুক্রবার (১ মার্চ) নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মা ও বোন বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। মেহেদীর অকালমৃত্যু এলাকাবাসী মেনে নিতে পারছে না। ছেলেকে হারিয়ে এখন পাগলপ্রায় বাবা আয়নাল মিয়া।
নিহত মেহেদীর ভাই ইসরাফিল বলেন, তারা দুই ভাই একই জায়গায় কাজ করতেন। অগ্নিকাণ্ডের আগেই তিনি একটি কাজে ভবনের অন্য আরেকটি ফ্লোরে ছিলেন। পরে তিনি ভবন থেকে লাফিয়ে প্রাণে বাঁচেন। সকালে ভাইয়ের মরদেহ গ্রামের বাড়ি নিয়ে এসে দাফন করেছেন। সরকারের কাছে সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বোন সুমাইয়া আক্তার বলেন, আমার ভাই বৃহস্পতিবার ফোন দিয়ে বলেছে- তুমি বাবার বাড়ি যাও, আমি আসব। আমার সেই ভাই আর এলো না। আমার ভাই রেস্টুরেন্টে চাকরি করত। আমার ভাইয়ের আয় দিয়ে সংসার চলত। মাসে ২০ হাজার টাকা বেতন পেত। শুক্রবার আসার কথা ছিল। আর এলো না আমার ভাই।
বাবা আয়নাল হক জানান, অভাব অনটনের সংসার চালাতেই দুই ভাই কাজ করতেন বেইলি রোডের ওই ভবনে। তার দুই ছেলে, এক মেয়ে। বড় ছেলে মেহেদীর বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন ছিল। পাসপোর্ট করার জন্য কাগজপত্র রেডি করতেছিল। মেহেদী স্বপ্ন দেখতো, বিদেশে গিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে পরিবারের অভাব অনটন দূর করবে। কিন্তু ভাগ্য সহায় হলো না। তার স্বপ্ন পূরণ হলো না। সরকারের কাছে তিনিও সহযোগিতা কামনা করছেন।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাকিলা বিনতে মতিন জানান, মেহেদীর পরিবারের পাশে উপজেলা প্রশাসন সব সময় থাকবে। এই পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।